জাতের নামঃ |
বিনাধান-৪ |
জাতের বৈশিষ্ট্যঃ |
বিনাধান-৪ এর গাছের উচ্চতা ১১৫-১২৫ সেমি । প্রতি গুছিতে কুশির সংখ্যা ৮-৯ টি, ছড়া ২৫-২৬ সেমি লম্বা ও গড়ে ১১৫-১২০ টি ধান ধরে। জীবনকাল ১৩০-১৩৫ দিন। ১০০০ ধানের ওজন ২৫ গ্রাম। ধান ও চাল চিকন ও লম্বা। |
জমি ও মাটিঃ |
বেলে দো-আঁশ এবং এটেল দো-আঁশ জমি বিনাশাইল চাষের উপযোগী। উঁচু জমি এ জাত চাষের জন্য উপযোগী। |
জমি তৈরীঃ |
জাতটির চাষাবাদ পদ্ধতি অন্যান্য উফশী রোপা আমন জাতের মতই। |
বপণের সময়ঃ |
বীজ তলায় বপন - আষাঢ়ের প্রথম সপ্তাহ। |
বীজ হার ঃ |
ভারী দেখে বীজ বাছাই করে ৫ শতাংশ বীজ তলায় ১০ কেজি বীজ বপন করলে এ চারা দিয়ে প্রায় ১ একর জমি রোপন করা যায়। |
বীজ শোধন ঃ |
প্রতি ১০ কেজি বীজে ২৫ গ্রাম ভিটাভ্যাক্স-২০০ বা ব্যাভিস্টিন ব্যবহার করা যেতে পারে। বীজ শোধনের জন্য মাত্রানুযায়ী ছত্রাকনাশক মিশিয়ে একটি বদ্ধ পাত্রে ৪৮ ঘন্টা রাখা আবশ্যক। |
সার ও প্রয়োগ পদ্ধতিঃ |
প্রতি হেক্টরেঃ বীজ তলার জন্য উর্বর ও স্বল্প উর্বর জমিতে বীজতলা তৈরী করলে কোনরূপ সার প্রয়োজন হয়না। অনুর্বর ও স্বল্প উর্বর জমিতে কেবল দুই কেজি পঁচা গোবর বা আবর্জনা সার প্রয়োগ করলেই চলে। চারা গজানোর পর গাছ হলুদ হয়ে গেলে দু’সপ্তাহ পর প্রতি বর্গ মিটারে ৭ গ্রাম ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগের পর জমি থেকে পানি নিষ্কাশণ করা যাবেনা। রোপা ক্ষেতের জন্য ইউরিয়াঃ ১৮০-২০০ কেজি, টিএসপিঃ ৫০-৬০ কেজি, এমওপিঃ ৮০-১০০ কেজি, জিপসামঃ ৫০-৬০ কেজি ও দসত্মাঃ ৩.০-৫.০ কেজি। প্রয়োগের নিয়মঃ রোপার জন্য জমি তৈরীর শেষ চাষের আগে সম্পূর্ণ টিএসপি এবং এমওপি জমিতে সমভাবে ছিটিয়ে চাষের মাধ্যমে মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। ইউরিয়া সারের অর্ধেক পরিমাণ চারা রোপনের ৭-৮ দিন পর, এবং বাকি অর্ধেক ৩০-৩৫ দিন পর জমির উর্বরতার উপর নির্ভর করে প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া সার প্রয়োগের ২/১ দিন আগে জমির অতিরিক্ত পানি বের করে দিতে হবে এবং প্রয়োজন হলে আগাছা দমন করতে হবে। জমির উর্বরতা ও ফসলের অবস্থার উপর নির্ভর করে ইউরিয়া সার প্রয়োগ মাত্রার তারতম্য করা যেতে পারে। মনে রাখতে হবে টিএসপি ও দসত্মা সার একই সাথে প্রয়োগ করা যাবেনা। তাই এক্ষেত্রে একচাষ পূর্বে টিএসপি প্রয়োগ করতে হবে এবং শেষ চাষের সময় ইউরিয়া ছাড়া অন্যান্য সার ছিটিয়ে প্রয়োগ করা অবশ্যক। |
সেচ ও নিষ্কাশনঃ |
জমি তৈরীর সময় ২/৩ বার স্বাদু পানি দিয়ে লবণাক্ত পানি বের করে দিলে জমির লবণাক্ততা অনেকটা কমে যায়। তাছাড়া কুশি, ফুল আসা ও পরিপক্কতার সময় লবণের মাত্রা ১০ ডিএস/মিটারের বেশী হলে স্বাদু পানি দিয়ে লবণাক্ততা কমিয়ে আনতে হবে। ধান পাকার ১০-১২ দিন আগে জমির পানি শুকিয়ে ফেলা ভাল। |
আগাছা দমন ও মালচিংঃ |
চারা রোপনের পর আগাছা দেখা দিলে নিড়ানী বা হাতের সাহায্যে আগাছা পরিষ্কার এবং মাটি নরম করে মালচিং করতে হবে । |
বালাই ব্যবস্থাপনাঃ |
রোগবালাই ও কীট পতঙ্গের আক্রমণ দেখা দিলে নিকটস্থ কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তার উপদেশ মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। পেকামাকড়ের আক্রমণ দেখা দিলে প্রচলিত তরল বা দানাদার কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে রোগবালাই যেমন- খোলা ঝলসানো দেখা দিলে -হোমাই ৮০ ডব্লিইপি বা টিলট একর প্রতি ১ -১.২ কেজি হারে ১০০ লিটার পানিতে মিশিয়ে থোড় আসার সময় বা তার পর পরই স্প্রে করা যেতে পারে। এছাড়া ব্লস্ট রোগ দমনের জন্য হিনোসান ৫০ ইসি বা টপসিন মিথাইল ৮০ মিলি ৬০-১০০ লিটার পানিতে ২৫ শতাংশ জমিমে স্প্রে করা যেতে পারে। পোকামাকড় দমনের জন্য আই পি এম পদ্ধতি ভাল। জমিতে মাজরা পোকা, পাতা পোষক পোকা, ফড়িং বা অন্যান্য কীট পতঙ্গের আক্রমণ হলে ডায়াজিনন-১০ (দানাদার) একর প্রতি ৬.৮ কেজি হারে ছিটিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে বা সবিক্রন-৪২৫ ইসি ২০ মি.লি. ১০ লিটার পানিতে মিশ্রিত করে ২০০ বর্গ মি. (৫ শতাংশ) জমিতে স্প্রে করা যেতে পারে। |
হেক্টর প্র্তি ফলনঃ |
গড় ফলন ৪.৭ টন/হেক্টর । |
প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলুন ধান ফসল বিশেষজ্ঞ |
(সকাল ৯ টা-বিকাল ৫টা) কলকরুনঃ +৮৮০১৭১১৬২৮০৭২১ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নাম ও পদবী |